এডভোকেট মোহাম্মদ সরোয়ার হোসাইন লাভলু :
চট্টগ্রাম–৪ (সীতাকুণ্ড, আকবর শাহ, পাহাড়তলী–খুলশী আংশিক) একটি রাজনৈতিকভাবে পরিপক্ব এলাকা। এই করিডোরে নেতৃত্বের মূল্যায়ন হয় দীর্ঘ পথ চলা, মানুষের পাশে থাকা, সংগঠনের প্রতি নিষ্ঠা আর দলীয় আদর্শের প্রতি অটুট অবস্থানে। এই মানদণ্ডে কাজী মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন শুধু একজন প্রার্থী নন, তিনি এক ধারাবাহিক রাজনৈতিক যাত্রার প্রাণবন্ত উদাহরণ। তার সবচেয়ে বড় পরিচয় হলো—তিনি জিয়া পরিবারের মানুষ। তিন দশকের রাজনৈতিক জীবনে তিনি কোনোদিন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শের বাইরে যাননি। মাঠের রাজনীতিতে যে স্থিরতা, যে আদর্শচিন্তা এবং যে আনুগত্য প্রয়োজন— কাজী সালাহউদ্দিন সেই তিনটি স্তম্ভের ওপর নিজের পথচলা গড়েছেন।
জিয়া পরিবারের প্রতি তাঁর অটুট অবস্থান
কাজী সালাহউদ্দিনের রাজনৈতিক জীবনে একটা জিনিস কখনোই পরিবর্তন হয়নি—জিয়া পরিবারের প্রতি তার নিঃশর্ত সমর্থন।
তিনি ছাত্রদল থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত একটাও দিন আদর্শের বাইরে যাননি। শহীদ জিয়ার দেশপ্রেম, সংগঠন গড়ার দর্শন, তৃণমূলকে মূল্য দেওয়ার রাজনীতি তাকে শিখিয়েছে কীভাবে একজন নেতা জন্মায়।
এটাই তাকে সবসময় কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ভরসার জায়গায় রেখেছে।
বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতি তার গভীর শ্রদ্ধা ও আনুগত্য তিনি শুধু কথায় নয়, সংগঠন পরিচালনার প্রতিটি ধাপে প্রমাণ করেছেন। মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সহ কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশনা তিনি সব সময়ে গুরুত্বের সঙ্গে বাস্তবায়ন করে এসেছেন।
রাজনীতিতে নীতির উপর দাঁড়ানো মানুষ কমে আসছে, কিন্তু সালাহউদ্দিন সেই হারিয়ে যাওয়া ধারার একজন প্রতিনিধি।
তার রাজনৈতিক অধ্যায়ের শুরু তৎকালীন সীতাকুন্ডের কর্ণধার বিএনপি'র সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান , সাবেক বারবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য, সাবেক মন্ত্রী ও সাবেক ডেপুটি স্পিকার মরহুম ইঞ্জিনিয়ার এল কে সিদ্দিকীর হাত ধরে সীতাকুণ্ড ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলে। তিনি কাজী সালাউদ্দিনকে নিজের পুত্রের মত স্নেহ করতেন। কাজী সালাউদ্দিন সীতাকুণ্ড ডিগ্রী কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক, পরে সভাপতি—এই দুই বছরেই তিনি স্পষ্ট করেছিলেন তিনি কাকে অনুসরণ করেন এবং কোন পথেই তিনি হাঁটবেন। এরপর টানা সাত বছর উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি এবং চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এই সময়ে তিনি শুধু সংগঠন চালাননি, তিনি পুরো সীতাকুণ্ড–ফৌজদারহাট অঞ্চলে জিয়া পরিবারের রাজনীতিকে শক্ত ভিত্তিতে দাঁড় করিয়েছেন।
পরে যুবদলের সভাপতি হিসেবে দীর্ঘ ২০১০ থেকে ২০১৮—এই আট বছরের নেতৃত্ব তাকে চট্টগ্রাম উত্তর এলাকার সবচেয়ে পরিচিত, বিশ্বস্ত এবং সংগঠন পরিচালনায় দক্ষ নেতায় পরিণত করে।
তারপর বিএনপির মূল নেতৃত্বে—জেলা বিএনপির সদস্য, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক এবং সর্বশেষ যুগ্ম আহ্বায়ক—এই তিনটি ধাপ তাঁর রাজনীতিকে দেয় পূর্ণতা।
আদর্শ থেকে একচুলও সরেননি । রাজনীতিতে সুবিধাবাদ—এখন বাস্তবতা। কিন্তু কাজী সালাহউদ্দিনের প্রতি নেতাকর্মীর আস্থা তৈরি হয়েছে একটাই কারণে—তিনি পজিশন বদলাননি। তিনি কখনো জিয়া পরিবারের বাইরে তাকাননি।
তিনি কখনো অন্য কোনো রাজনৈতিক শক্তির সঙ্গে সখ্য দেখাননি। তিনি কখনো দোলাচলের রাজনীতিতে যাননি।
তার অবস্থান খুব সরল এবং পরিষ্কার—শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শ, বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্ব, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা এবং কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের প্রতি পূর্ণ আনুগত্য।
এখানেই তিনি আলাদা। তৃণমূলকে পরিবার মনে করেন
কাজী সালাহউদ্দিনের বড় শক্তি তার নেতৃত্ব নয়, তার সম্পর্ক।
তিনি সীতাকুণ্ড, আকবর শাহ, পাহাড়তলী, খুলশীর তৃণমূল নেতাকর্মীদের পরিবার বলে মনে করেন। ঈদ, কোরবানি, দুর্ঘটনা, মামলা, রাজনৈতিক দমন–পীড়ন—যে ঘটনাই হোক, নেতাকর্মীদের পাশে তাকে পাওয়া যায়।
মানুষের ঘরে ঘরে তার উপস্থিতি আছে। নেতাকর্মীরা বলেন— " কাজী সালাহউদ্দিন ভাই নেতা নন, তিনি পরিবারের অভিভাবক।"
এই সম্পর্ক রাজনীতির মাধ্যমে তৈরি হয় না। এটা হয় ভালোবাসা, দায়িত্ববোধ আর মানুষের দুঃখ–কষ্টকে নিজের মনে করার সংস্কৃতি থেকে।
কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় রাজনীতি।
তিনি কখনো ব্যক্তির রাজনীতি করেননি। তিনি সবসময় কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সিদ্ধান্তকে চূড়ান্ত হিসেবে গ্রহণ করেছেন।জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন—সব দরজায় তারেক রহমানের নির্দেশনা তিনি কড়া শৃঙ্খলার মতো ধরে রেখেছেন।
এই শৃঙ্খলাই তাকে একজন গ্রহণযোগ্য, পরিপক্ব এবং বিশ্বাসযোগ্য নেতা করেছে।
কেন তিনি চট্টগ্রাম–৪ এর জন্য সবচেয়ে যোগ্য
চট্টগ্রাম–৪ এর রাজনীতিতে তিনটি জিনিস প্রয়োজন
১. অভিজ্ঞতা
২. গ্রহণযোগ্যতা
৩. ধারাবাহিক আদর্শ
সালাহউদ্দিন এই তিনটি জায়গায়ই পূর্ণ নম্বর পান।
দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তাঁর ওপর আস্থা রেখেছে। তৃণমূল তাকে চেনে। মানুষ তাকে বিশ্বাস করে।
আর অদম্য রাজনৈতিক নিষ্ঠা তাকে এগিয়ে রেখেছে সব প্রার্থীর চেয়ে আলাদা জায়গায়।
কাজী মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন শুধু একজন নেতা নন। তিনি জিয়া পরিবারের রাজনৈতিক ধারা, বিশ্বাস, তৃণমূলের আবেগ এবং সংগঠনের আত্মা ধরে রাখা এক নিবেদিত যোদ্ধা।
লেখক : অতিরিক্ত জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর, চট্টগ্রাম
টিম লিডার, নির্বাচনী মিডিয়া সেল, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল, সংসদীয় আসন চট্টগ্রাম-৪
