★বর্ষা মৌসুমে নদী-খালজুড়ে অবাধে চলছে মৎস্য নিধন।
★মা মাছ ও পোনার নিশ্চিহ্ন ধ্বংসে হুমকির মুখে জলজ প্রাণবৈচিত্র্য।
★স্থানীয় গবেষকদের সতর্কবার্তা—অবিলম্বে ব্যবস্থা না নিলে ভয়াবহ পরিণতি।
হাফেজ নজরুল , মুরাদনগর কুমিল্লা থেকে :
মুরাদনগরে জলাশয়ে প্রজনন বর্ষার মৌসুমেও নির্বিচারে ব্যবহার করা হচ্ছে নিষিদ্ধ জাল। সরকারি অনুমোদনবিহীন এসব জালের মাধ্যমে ছোট মাছ ও পোনা ধরে নেওয়ায় দেশের দেশি মাছের প্রজাতি টিকে থাকার ঝুঁকিতে পড়েছে।
স্থানীয় মৎস্যজীবী ও সচেতন নাগরিকরা অভিযোগ করেছেন, কর্তৃপক্ষের যথাযথ নজরদারি ও নিয়মিত অভিযানের অভাবেই এ অবৈধ কার্যক্রম দিন দিন বেড়েই চলছে। স্থানীয় মৎস্যজীবী সাংবাদিক ইউনুস মিয়া বলেন, প্রজনন মৌসুমে পোনার এই নিধন আমাদের জীবিকা ধ্বংস করছে। জলাশয়ের সুস্থ প্রজনন চক্র ভেঙে পড়ছে। যদি এখনই কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, তাহলে ভবিষ্যতে মাছের সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুর রহমান বলেন, চায়না দোয়ারি ও অন্যান্য নিষিদ্ধ জালের বিরুদ্ধে আমরা অভিযান পরিচালনা করেছি। তবে মৎস্য কর্মকর্তা না থাকায় অনেক সময় নিয়মিত অভিযান চালানো সম্ভব হয়নি।
সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সুমন লাল দেবনাথ বলেন, নিষিদ্ধ জালের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে অভিযান শুরু করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। যে কোনো মূল্যে দেশি মাছের প্রজনন ও জলাশয়ের ভারসাম্য রক্ষা করা হবে।
বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা মৎস্য সংরক্ষণ বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রজনন মৌসুমে অকাল পোনা নিধন জলাশয়ের ইকোসিস্টেমে ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। দেশি প্রজাতির মাছের সংখ্যা ধীরে ধীরে হ্রাস পেলে স্থানীয় জেলেদের জীবন-জীবিকায় সরাসরি প্রভাব পড়বে। আর্থিক অনিশ্চয়তার পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তাও হুমকির মুখে পড়বে বলে তারা সতর্ক করেছেন।
স্থানীয়দের দাবি এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে স্থানীয় নাগরিক ও মৎস্যজীবীরা প্রশাসনের কাছে কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন। তাদের মতে, অবৈধ জাল ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা গেলে ভবিষ্যতে এ ধরনের অনিয়ম অনেকাংশে বন্ধ হবে। তাদের একটাই প্রত্যাশা, দেশি মাছের প্রজনন মৌসুমে জলাশয়গুলোকে নিরাপদ রাখা, যাতে জীববৈচিত্র্য অক্ষুণ্ণ থাকে এবং জেলেদের জীবিকা টেকসইভাবে বজায় থাকে।